মনির খান বিশেষ প্রতিনিধি। এখন আর সন্ধ্যার পর এক জনের পড়া শুনে আরেকজনের পাল্লা দিয়ে বই পড়া হয় না। এখন আর কোন মা-বাবা তার সন্তানকেও বলে না যে আশিক কি সুন্দর পড়ছে, তুই বসে আছিস কেন? অথচ ৮/১০ বছর আগেও সন্ধ্যার পর চারপাশ থেকে বিভিন্ন ভঙ্গিতে বই পড়ার আওয়াজ শোনা যেতো, পরীক্ষার সময় আসলে তো কথাই নাই, কোন সহপাঠী বন্ধু দিনে ও রাতে কতক্ষণ পড়ালেখা করেছে তা গোপনে খোঁজ খবর নিয়ে তাদের সাথে প্রতিযোগিতা চালাতো পরিক্ষার রেজাল্ট তার থেকে ভালো করার জন্য।
সবচেয়ে খারাপ ছাত্রটিও রাত-দিন পড়া লেখা করতো, যে কোন বোর্ড পরীক্ষার আগে গভীর রাতে ঘুম থেকে উঠে লেখা পড়ার চর্চা করতো, এখন তা আর করে না। তার কারণ একটাই মোবাইলে গেম খেলা ছাত্র ছাত্রীদের নেশা ও পেশা হিসেবে পরিনত হয়েছে। আগের দিনে,প্রতিটি ফ্যামেলীতে একটা করে অ্যালার্ম ঘড়ি থাকতো, ঘড়িতে অ্যালার্ম দিয়ে রাখতো তখন অ্যালার্ম ঘড়ির একটা কদর ওছিল, বিকেল বেলা প্রত্যেকটি ছাত্র-ছাত্রিরা ফুটবল ও চি বুড়ি খেলা করতো এবং সন্ধ্যা লাগলেই বই নিয়ে পড়তে বসতো অনেক সময় আগের বছরে পাশ করা ভাই বোনদের কাছে থেকে সাজেশনস এনে চুল ছেঁড়া বিশ্লেষণ চলতো, এবং তাদের পুরনো বই সংগ্রহ করে চলত পড়াশোনা, মাত্র ৮/১০ বছরের ব্যবধানে সবই প্রায় বিলীন হয়ে গেল তার কারণ একটা ই -মোবাইলে গেম খেলা, সন্ধ্যার পর ছাত্র-ছাত্রীদের বাজারে তো দূরের কথা ঘরের বাইরে দেখলেই সবাই অবাক হতো,
প্রত্যেকটি টি গার্ডিয়ান রা শাসন করতো, আর এখন দেখা যায় অনেক রাত পর্যন্ত ছেলেরা বাজারে আড্ডা দিচ্ছে, কেউ কিছু বলছে না সন্ধ্যার পর এখন দল বেঁধে নামধারী ছাত্র ছাত্রীরা মোবাইলে ব্যস্ত থাকে, কোথাও কোন পড়ার শব্দ নেই, গ্রুপ চ্যাটিং, অনলাইন/অফলাইন গেমস, পাব্জি, ফ্রী ফায়ার, টিকটক, ফেসবুক, ইউটিউব, চুলের বিভিন্ন স্টাইল কার্টিং করে পাড়া-মহল্লায় ও বাজারে আড্ডাবাজি, গ্রুপিং করা, এগুলোই এখন তাদের পছন্দের তালিকা।
পড়া লেখা ধ্বংসের পথে। এই ধরনের খেলা থেকে ছেলে মেয়েরা বিভিন্ন প্রকার নেশায় ও আসক্ত হচ্ছে। লোহাগড়া উপজেলায় সকাল ৮ টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত মোবাইলে গেম খেলার স্থান সমূহ: লক্ষ্মীপাশা চৌরাস্তা মিলুর চা দোকান, লক্ষ্মীপাশা খেয়া ঘাট হিরোকের চা দোকান, গোপিনাথপুর গ্রামের বেপারী পাড়া শিমুলের চা দোকান, এমন করে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় চায়ের দোকান গুলোতে ছাত্রদের উল্লেখিত কার্যক্রম গুলো নির্দ্বিধায় চলছে। অনেক ক্ষেত্রে সন্ধ্যার পর ছেলে ও মেয়ে উভয়ই মিলে চায়ের দোকানে চায়ের আড্ডায় মেতে উঠেছে। উল্লেখিত বিষয়গুলো কঠোর হস্তে দমন করে ছেলে মেয়েদের সু পথে আনার জন্য নড়াইল জেলা পুলিশ সুপারের কাছে অনুরোধ লোহাগড়া উপজেলা বাসীর। কোমল মতি ছেলে মেয়েদের পড়া লেখা, ধ্বংসের পথ থেকে বাঁচাতে প্রত্যেকটি চায়ের দোকানে সন্ধ্যার দিকে অভিযান চালানোর জোর দাবী জানান।