টানা দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় পর সিরাজগঞ্জে কমতে শুরু করেছে যমুনা নদীর পানি। তবে ২৩ জুন (বৃহস্পতিবার) বিকেল পর্যন্ত যমুনার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়েই প্রবাহিত হচ্ছিল। বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও পানিবন্দী আছেন নিম্নাঞ্চলের শতাধিক গ্রামের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ।
পানি কমতে থাকায় শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলার নদীভাঙন অনেকটা কমেছে। তবে স্থানীয় ব্যক্তিদের আশঙ্কা যমুনা নদীর পানি আরও কিছুটা কমলে নদীভাঙন আরও তীব্র আকার ধারণ করবে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া তথ্য বলছে বৃহস্পতিবার বেলা তিনটায় সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্ট এলাকায় যমুনার পানি রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৭৮ মিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ সেন্টিমিটার কমে এখনো যমুনার পানি বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এখানে বিপৎসীমা ১৩ দশমিক ৩৫ মিটার।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, যমুনা নদীতে পানি কমতে শুরু করলেও ফুলজোড়, করতোয়া, বড়াল, হুড়াসাগর, ইছামতীসহ অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানি বাড়া অব্যাহত আছে। এখনো জেলার ৫টি উপজেলার ৩৮টি ইউনিয়নের ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ পানিবন্দী আছেন। পানিতে তলিয়ে গেছে ৯ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমির ফসল।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, বন্যায় এরই মধ্যে ৯ হাজার ১০৬ হেক্টর জমির পাট, তিল, সবজি, বোনা আমন, রোপা আমনের বীজতলা ও গ্রীষ্মকালীন মরিচ নষ্ট হয়ে গেছে। তবে দ্রুত পানি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই কম হবে।
জেলা ত্রাণ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানা গেছে, চলতি বন্যায় জেলার ৫টি উপজেলার ৩৮টি ইউনিয়নের ৮ হাজার ৪০০ পরিবারের প্রায় ৫২ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। ইতিমধ্যে বন্যাকবলিত মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের জন্য ১৪০ মেট্রিক টন চাল, ২ লাখ টাকা ৫০০ প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এসব শিগগিরই বিতরণ করা হবে। এ ছাড়া মজুত আছে ৭৭১ মেট্রিক টন চাল ও ১৪ লাখ টাকা।