মোঃ সফিয়ার রহমান পাইকগাছা খুলনা।। পাইকগাছার রাড়ুলীর দক্ষিণ পাড়া সার্বজনীন পূজা মন্দিরে তালা ঝুলছে। এ অবস্থায় গ্রামবাসিরা এই বৃষ্টি-বাদলে মন্দিরে নয় সামনে রাস্তায়কললজল উপর উন্মুক্ত স্থানে ‘শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী’ পূজা করছেন। ১৮ আগস্ট -২২ দিন ভোর
রাড়ুলী ইউপি চেয়ারম্যান ও ক্যাম্প পুলিশ শতচেষ্টা করেও দু’পক্ষের মধ্যে মিমাংসা না হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। জানাগেছে, বিবাদমান দু’পক্ষই আদালতে ১৪৪ ধারার মামলা করলে আদালতের নির্দেশ মতে পুলিশ দু’পক্ষকে স্ব-স্ব অবস্থানে থাকার নির্দেশনা দিয়ে নোটিশ দিয়েছেন। সার্বজনীন এ মন্দিরটি ৯২ বছর পূর্বে ১৯৩০ সালে ৫ শতক জমির উপর প্রতিষ্ঠা হয়। দীর্ঘ সময়ে পূজাপার্বন, নামযজ্ঞ সহ সকল ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালিত হয়ে আসছে। এ পর্যন্ত সরকারী ও বেসরকারী ভাবে ও গ্রামবাসীদের অর্থায়নে মন্দিরের অবকাঠামো উন্নয়ন ও পুকুর সহ জমির পরিমান বেড়েছে। রাড়ুলী মৌজার ১/১ খতিয়ানভুক্ত ৪৯৫০ দাগের ৫ শতক জমি হাল জরিপে মন্দিরের নামে রেকর্ড হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে মন্দিরের আয়-ব্যয় সহ কমিটি দ্বন্দ্বে শেষ পর্যন্ত মনোরঞ্জন মন্ডল গংরা মন্দিরের জমি ব্যক্তিগত দাবী করায় দু’পক্ষই বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে বসাবসি, ইউনিয়ন পরিষদ ও পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ হস্তক্ষেপ করলেও সমাধান হয়নি। এদিকে কমিটির একাংশের সভাপতি শিবপদ সরকার-মনোরঞ্জন মন্ডল গং ও নবাগত কমিটির সভাপতি বিকাশ চন্দ্র সরকার-সম্পাদক পার্থ সরকার গংরা পাইকগাছার নির্বাহী আদালতে পাল্টাপাল্টি ১৪৪ ধারার মামলা করেছেন। আদালত শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে উভয় পক্ষকে স্ব-স্ব অবস্থানে থাকার নির্দেশনা দিলে পুলিশ দু’পক্ষকে নোটিশ দিয়েছেন। মন্দিরে তালা ও মামলার ঘটনায় দুঃখজনক উল্লেখ করে সমাধানের জন্য স্থানীয়রা উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের হস্তক্ষেপে কামনা করেছেন।
নতূন কমিটির সভাপতি- বিকাশ সরকার ও সম্পাদক পার্থ সরকার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শিবপদ সরকার গংরা আয়-ব্যয়ের হিসাব দেন না, এছাড়া ৯২ বছরের সার্বজননী পূজা মন্দির এখন মনোরঞ্জন পক্ষরা নিজেদের দাবী করে অশান্তী সৃষ্টি করেছেন। এমনকি আদালত অবমাননা করে মন্দিরে তালা ঝুলিয়ে জমি দখল করে ঘর বেঁধেছেন। সমাধান না হওয়ায় তারা মন্দিরের সামনে রাস্তার উপর জন্মাষ্টমী পালন করার কথা বলেন। এ অভিযোগ সম্পর্কে মন্দির কমিটি একাংশের সভাপতি শিবপদ সরকার বলেন, প্রতিপক্ষ কমিটির লোকেরা দীর্ঘদিন ধরে মন্দিরে আসে না।
এ নিয়ে আদালতে দু’পক্ষর মামলা হলে পুলিশ নোটিশ দিয়ে উভয়কে স্ব-স্ব অবস্থানে থাকার কথা বলেছেন। এ বিষয়ে উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ দু’পক্ষকে নিয়ে বসাবসি করে যে সিদ্ধান্ত দিবেন সেটা তিনি মানবেন বলে জানিয়েছেন। উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সমীরন সাধু ও সম্পাদক আনন্দ মোহন বিশ্বাস জানান, রাড়ুলীর এ মন্দির সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বসাবসি হলেও দু’পক্ষই নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় থেকে আদালতে ১৪৪ ধারার মামলা করে পরিবেশ কঠিন করে তুলেছেন। তবে তারা আশাবাদি জন্মাষ্টমীর পর দু’পক্ষের মধ্যে বসাবসি করে শান্তিপূর্ণ সমাধান করতে পারবেন। রাড়ুলী ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ বলেন, সার্বজনীন মন্দির কারোর ব্যক্তিগত হয় নাকি ? তিনি আরোও বলেন, বৃহস্পতিবার দু’পক্ষকে ডেকেছিলাম, কিন্তু মনোরঞ্জন পক্ষরা সাড়া দেয়নি বলে মিমাংসা হয়নি। এ বিষয়ে ওসি মোঃ জিয়াউর রহমান বলেন, এখানে অন্য পক্ষের ইন্ধন আছে। আসলে মন্দির নিয়ে কোন সমস্যা নয়। মুলত নেতৃত্ব ও মন্দিরের পুকুরের মাছ নিয়ে বিরোধ থেকে দু’পক্ষই জড়িয়ে পড়েছেন।