অসহায় চা শ্রমিকদের দাবি দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা করার। তাদের এই ন্যায্য দাবি যেকোনো সচেতন এবং মানবিক মানুষের দৃষ্টিতে ১০০℅ যৌক্তিক। চা শ্রমিক ভাই-বোনেরা সারাদিন পরিশ্রম করে, শরীরের ঘাম জড়িয়ে সারাদিনের পারিশ্রমিক মাত্র ১২০ টাকা পায়। এই ১২০ টাকায় কিভাবে তাদের সংসার চলবে। দিন দিন নিত্য পন্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এসময়ে এসে তারা কিভাবে ১২০টাকা দৈনিক মজুরি পেয়ে তা দিয়ে খেয়ে-বেঁচে দিন কাটাবে৷ এটা কি আদৌও সম্ভব। আর কতদিন এই গরীব, অসহায় শ্রমিকদের রক্ত চুষে খাবেন আপনারা? একটা বারও কি ভেবে দেখেছেন সারাদিন পরিশ্রম করে, মাথার ঘামে পায়ে ফেলে যে মানুষটি পরিশ্রম করছে, যার পরিশ্রমের কারনে আপনি আরাম-আয়েশে, সুখে শান্তিতে দিন কাটাচ্ছেন সেই মানুষটি কেমন আছে, কেমন করে তাঁর দিন কাটছে, সে কি দু-বেলা পেট ভরে দুমুঠো ভাত খেতে পারছে? না তা ভাববেন কেন…. আপনি তো ভালোই আছেন, পায়ের ওপর পা তুলে আরাম আয়েশে খাচ্ছেন-দাচ্ছেন, পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরছেন, নরম তোশকে ঘুমাচ্ছেন। আপনার কিসের চিন্তা, আপনি তো টেবিলে চিকন চালের ভাত আর মাংস-পোলাও ইচ্ছে মতো খাচ্ছেন। শুনে রাখুন জনাব, আপনার এই আরাম-আয়েশ আর সুখ-শান্তির কারণ ওই গরীব শ্রমিক। ওই গরীব শ্রমিক ভাই-বোনেটা সারাদিন কষ্ট করে পরিশ্রম করে বলেই আপনি এতো ভালো আছেন, পরিবার নিয়ে সুখে-শান্তিতে আছেন। একবার ভাবুন তাদের কথা, মাত্র ১২০ টাকায় কিভাবে তাদের সংসার চলবে। দয়া করে আপনারা একবার তাদের মজুরী বৃদ্ধির কথা একটু সহানুভূতি আর মানবিকতার সাথে বিবেচনা করুন।
আচ্ছা একবার ভেবে দেখুন তো ১২০ টাকা দিয়ে কি আপনাদের সংসার চালানো সম্ভব। দৈনিক ১২০ টাকায় কি আপনাদের সংসার চলবে। আপনাদের তো দৈনিক হাজার হাজার, কারো কারো লক্ষ লক্ষ টাকাও খরচ করতে হয়। তাহলে এই গরীব অসহায় মানুষের জীবন কিভাবে দৈনিক মজুরি মাত্র ১২০ টাকা দিয়ে চলবে।
বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, পৃথিবী আজ দুভাগে বিভক্ত, শোষক শ্রেণি আর শোষিত শ্রেণি, আমি শোষিতের পক্ষে। আজ একবিংশ শতাব্দীর এই সময়ে এসে চিৎকার করে বলতে চাই, আমি শোষিতের পক্ষে।
চা বাগানে যেসকল চা-শ্রমিক ভাই-বোনেরা কাজ করেন তারা দরিদ্র, গরীব, অসহায়। ১২০ টাকা মজুরিতে তাদের সংসার চালানো সত্যি খুব দায়। তারা তাদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা করার দাবি জানাচ্ছেন। তাদের এই যৌক্তিক এবং ন্যায্য দাবির পক্ষে সকল সচেতন মানবিক মানুষেরা, নেতৃবৃন্দ এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গরাও সমর্থন জানিয়েছেন। তাদের এই যৌক্তিক দাবি আদায়ে আমরা সবাই সোচ্চার। তাদের দাবি আপনাদের মানতে হবে, চা-শ্রমিক ভাই-বোনদের আর দাবায় রাখতে পারবা না।
চা-শ্রমিক ভাই-বোনদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার জন্য চা-বাগান মালিকদের অনুরোধ করছি। অনুগ্রহ করে আপনারা একটু সহানুভূতি, মানবিকতার দৃষ্টিতে থাকিয়ে চা-শ্রমিকের যৌক্তিক দাবি মেনে নিন।
লেখক: এ. জি জুবরান চৌধুরী
প্রয়াত ত্যাগী, বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম শোয়েব আহমদ চৌধুরী’র ব্যক্তিগত সহকারী ও উপদেষ্টা
সভাপতি, এক মুজিব লোকান্তরে লক্ষ মুজিব ঘরে ঘরে পরিষদ।
ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, বঙ্গবন্ধু গরীব, অসহায় ও দুস্থ শিক্ষার্থী সহায়তা সংস্থা।